করোনাকাল
বিচ্ছিন্ন অনুভব
মাহফুজা হিলালী

প্রবন্ধ
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
শামসুজ্জামান খান

গল্প
ডায়মন্ড লেডি ও পাথর মানব
হামিদ কায়সার

গদ্য
নিদ্রা হরণ করেছিল যে বই
মিনার মনসুর

নিবন্ধ
পঞ্চকবির আসর
সায়কা শর্মিন

বিশ্বসাহিত্য
আইজাক আসিমভের সায়েন্স ফিকশন
অনুবাদ: সোহরাব সুমন

বিশেষ রচনা
প্রথম মহাকাব্যনায়ক গিলগামেশ
কামাল রাহমান

শ্রদ্ধাঞ্জলি
মুজিব জন্মশতবর্ষ
মারুফ রায়হান
 
সাক্ষাৎকার
কথাশিল্পী শওকত আলী

জীবনকথা
রাকীব হাসান

ভ্রমণ
ইম্ফলের দিনরাত্রি
হামিদ কায়সার

ইশতিয়াক আলম
শার্লক হোমস মিউজিয়াম

নিউইর্কের দিনলিপি
আহমাদ মাযহার

শিল্পকলা
রঙের সংগীত, মোমোর মাতিস
ইফতেখারুল ইসলাম

বইমেলার কড়চা
কামরুল হাসান

নাজিম হিকমাতের কবিতা
ভাবানুবাদ: খন্দকার ওমর আনোয়ার

উপন্যাস
আলথুসার
মাসরুর আরেফিন

এবং
কবিতা: করেনাদিনের চরণ

১৭ বর্ষ ০৩ সংখ্যা
অক্টোবর ২০২৪

লেখক-সংবাদ :





ঢাকার দিনরাত
মারুফ রায়হান
ঢাকার বাইরে ছিলাম তিনটে দিন। ফিরে দেখি শীত বেড়ে গেছে, যানজট কিছুটা কমেছে। কিন্তু ধুলো আর শব্দদূষণের হাত থেকে মুক্তি নেই। ঢাকার বাইরে কুয়াশার রাজত্ব, আর ঢাকায় ধুলা-ময়লার, আবর্জনারও বটে। বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস হচ্ছে ধুলাবালি। এসব ধূলিকণা মুখে গেলে মানুষ যত্রতত্র থুতু ও কফ ফেলে। তা আবার ধুলার সঙ্গে মিশে নানা মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকতে পারে। আরেকটি উৎস হচ্ছে কয়লা ও জৈব জ্বালানি পোড়ানোর পাশাপাশি শহুরে যান্ত্রিকসহ নানা উৎস থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া ও ধুলা। এসব বাতাসে ক্ষুদ্র কণা ছড়ায়, যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গবেষকদের মতে, এসব ছাড়া বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ইটভাঁটি, শিল্প-কারখানার ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া এবং সড়ক ও ভবন নির্মাণসামগ্রী থেকে তৈরি ধুলা। ঢাকার ধুলাদূষণ নিয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) একটি গবেষণা আছে। তাতে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের গাছপালায় প্রতিদিন ৪৩৬ টন ধূলিকণা জমে। সেই হিসাবে প্রতি মাসে ১৩ হাজার টন ধুলা জমার হিসাব পেয়েছেন গবেষকরা। এই জমে থাকা ধুলা দিনের বেলা বাতাসের সঙ্গে মিশে যেমন দূষণ বাড়ায়, তেমনই রাতে গাড়ির অতিরিক্ত গতির সঙ্গে বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে দিনের বেলার চেয়ে রাতের বেলায় বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায়।

নতুন ভেন্যুতে বাণিজ্যমেলা

একে করোনা, তার ওপর নতুন ভেন্যু। চ্যালেঞ্জেরই বটে। যথারীতি ঢাকায় মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকে অনুষ্ঠেয় একুশের বইমেলা দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তার মানে হলো পহেলা ফাল্গুন এবং ভালবাসা দিবস- ঢাকার দুই উৎসবমুখর বিশেষ দিবস পেরিয়ে বইমেলা শুরু হবে। এতে লেখক-প্রকাশকরা কিছুটা দমে গেছেন, এটি সত্য। তবে ওমিক্রনের শঙ্কার ভেতর যে কোন জনসমাবেশই ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও বাণিজ্যমেলা চলছে। ঢাকার শেরেবাংলা নগর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে এবারই প্রথমবারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে পূর্বাচলের নবনির্মিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। সেখানে যাতায়াতের জন্য কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে বাণিজ্যমেলা পর্যন্ত মূল সড়ক (তিন শ’ ফুট) প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কের চার লেনে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে বিআরটিসির ডাবল ডেকার ৩০টি লাল রঙের বাস। সেগুলো কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত চলাচল করছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অস্থায়ী জায়গায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। প্রায় প্রতিবছর জানুয়ারির ১ তারিখ দেশের সরকারপ্রধান এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বাণিজ্যমেলার আয়োজক সংস্থা ইপিবি জানিয়েছে, মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক ছাড়াও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নেয়ার প্রকৃত ইতিহাস সবার কাছে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের ভেতরে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও তার জীবন ও কর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রথমদিকে বাণিজ্যমেলা জমে ওঠা নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও ছুটির দিন শুক্রবার বিপুল জনসমাগম হয়েছে। জমে উঠেছে বাণিজ্যমেলা, বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটেছে। উদ্বোধনশেষে কয়েক দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও নতুন জায়গা পূর্বাচলের স্থায়ী কমপ্লেক্সে যখন বাণিজ্যমেলা জমছিল না, তখন এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা উঠে আসে। এত দূরে কি বাণিজ্যমেলা জমবে? রাস্তা ভাল নয়, ভাঙাচোরা, ধুলায় মাখামাখি অবস্থা ইত্যাদি। কিন্তু সব আলোচনা-সমালোচনাকে পেছনে ফেলে জমে উঠেছে বাণিজ্যমেলা। বাণিজ্যমেলায় ভবনের মূল প্রবেশ পথ পার হলেই বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এই প্যাভিলিয়নের বাম দিক দিয়ে পশ্চিম দিকে এগিয়ে হাতের ডান দিকে দেখা যায় ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নগুলো। প্যাভিলিয়নগুলোর ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যাচ্ছে, সারি সারিভাবে সাজানো নতুন নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার। প্যাভিলিয়নগুলোতে ফার্নিচার বাড়িঘরের মতোই সাজানো হয়েছে, যা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে। ক্রেতা আকর্ষণ করতে এসব প্যাভিলিয়নে চলছে জমজমাট ছাড়ের অফার। তবে প্রচুর দর্শনার্থী থাকলেও ছাড়েও সাড়া মিলছে না তেমন। অর্থাৎ ক্রেতা পাচ্ছে না ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নগুলো। ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে ফার্নিচার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নতুন এবং পুরাতন ডিজাইনের ফার্নিচার দর্শনার্থীদের দেখাচ্ছে। এসব প্যাভিলিয়নগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ক্রয়াদেশ আশানুরূপ মিলছে না এখনও। তবে অংশগ্রহণকারীরা হতাশ নয়, মেলা শেষ হতে এখনও বাকি অনেকদিন। সামনের দিনগুলোতে ভাল ক্রয়াদেশ পাবেন বলে আশা করছেন তারা। ওমিক্রন পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে শেষদিকে বাণিজ্যমেলায় প্রচুর মানুষ যাবেন বলে আশা করা যায়।

বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্ব

আমরা জানি ঢাকা হলো মানুষের ভারে ও চাপে আক্রান্ত একটি মহানগরী। কিন্তু বিশে^রই সর্বোচ্চ জনঘনত্ব বিদ্যমান ঢাকার চারটি এলাকায়, সেটি আমরা অনেকেই জানতে পারিনি। সম্প্রতি জানা গেল ঢাকার লালবাগ, বংশাল, গে-ারিয়া ও সবুজবাগে প্রতি একরে ৭০০ থেকে ৮০০ মানুষ বাস করে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। রাজধানীর ৬৩% এলাকায় প্রতি একরে ৩০০ জনের বেশি মানুষ বাস করে। নগর-পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এক চিঠিতে জনঘনত্বের এই চিত্র তুলে ধরেছে। তারা বলছে, মহানগর বা মেগাসিটির ক্ষেত্রে জনঘনত্বের মানদণ্ড ধরা হয় একরপ্রতি সর্বোচ্চ ১২০ জন। অথচ ঢাকার ৬৩ শতাংশ এলাকায় প্রতি একরে ৩০০ জনের বেশি মানুষ বাস করে। একরপ্রতি জনঘনত্ব ৪০০ জনের বেশি ঢাকার ৪০ শতাংশ এলাকায়। সবচেয়ে বেশি জনঘনত্বের চার এলাকার বিষয়ে বিআইপি বলছে, এসব এলাকা অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধার সব মানদণ্ডে পিছিয়ে রয়েছে।

এটি সত্য যে ঢাকাকে বসবাস-অযোগ্যতার হাত থেকে বাঁচাতে হলে জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প নেই। ঢাকামুখী মানুষের ¯্রােত বন্ধ করতে হবে। ঢাকার বাইরে কর্মসংস্থান ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা বাড়ানো জরুরী। ঢাকার যে চারটি এলাকার কথা বলা হয়েছে, সেখানে ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। একটি ভবন তৈরি হয়েছে আরেকটি ভবন ঘেঁষে, কোন ফাঁকা জায়গা রাখা হয়নি। রাস্তাঘাটও সরু। অনেক জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ঢুকতে পারে না। যেমন পুরান ঢাকার গে-ারিয়া এক সময় ‘গ্রান্ড এরিয়া’ নামে পরিচিত ছিল। ঢাকার অপেক্ষাকৃত সচ্ছল মানুষের বাস ছিল সেখানে। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়িগঙ্গা নদী। সেই নদীর পানি এখন দূষিত। আর গ্রান্ড এরিয়া নামটি গে-ারিয়ায় রূপান্তরিত হয়েছে, এলাকাটি হয়ে গেছে অপরিকল্পিত ও ঘিঞ্জি। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি ক’বছর আমি গে-ারিয়ায় থেকেছি। তখন কিন্তু জনঘনত্ব সহনীয়ই ছিল সেখানে। ওই সময়ের কিছু আগে থেকে গে-ারিয়া এলাকায় জমির দাম বেড়ে যায়। বেশি দামে জমি কেনার কারণে কেউ জায়গা ছেড়ে ভবন নির্মাণ করেননি। অল্প জায়গায় ভবনসংখ্যা বেশি। তাই মানুষের বাসও বেশি।

ঢাকায় শম্পা বিশ্বাস

ডিসেম্বরে দুদিনের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন কলকাতার খ্যাতিমান শিল্পী শম্পা বিশ্বাস দুটি গানের চিত্রায়নে অংশ নিতে। পতি সীতাংশু ঘোষও ছিলেন সঙ্গে। সাব্বির-শম্পা শিল্পীজুটির প্রথম গানটি গাইতেই এর আগে শম্পার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসা। এ নিয়ে একই শিল্পীর সঙ্গে গান গাইতে দ্বিতীয়বারের মতো ঝটিকা সফরে এসেছিলেন শম্পা। আবার নতুন বছরের শুরুতেই শম্পা আবারও এলেন ঢাকায়। সঙ্গে স্বামী তো ছিলেনই, মা ও মেয়েকেও সফরসঙ্গী করেন। সত্যি বলতে কি শম্পার মায়ের আবাল্য লালিত স্বপ্ন একদিন পিতৃপুরুষের শহর ঢাকা দেখতে আসবেন। ছোটবেলায় কত গল্পই না শুনেছেন ঢাকার। কন্যা শম্পার মাধ্যমে সে স্বপ্ন পূরণ হওয়াও উচ্ছ্বসিত তিনি।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক সাব্বির নাসির এবং কলকাতার ‘সারেগামাপা’খ্যাত গায়িকা শম্পা বিশ্বাসকে গত এপ্রিলে এক সুতায় বাঁধেন প্লাবন কোরেশী। এই দুজন শিল্পীকে নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘বিনোদিনী রাই’। গানটি প্রকাশের পর বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলায় দারুণ সাড়া ফেলে। সাব্বির নাসির ও শম্পা বিশ্বাস বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলায় এখন বেশ জনপ্রিয়। এবার নতুন আরও দুটি গান নিয়ে কাজ করলেন এ জনপ্রিয় জুটি। তার একটি প্রেমের গান। সে গানেরই চিত্রায়ন হলো বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে। ডিসেম্বরে মাত্র দুদিন থাকায় ঢাকার কিছুই দেখার সুযোগ মেলেনি, এবার তাই সুদেআসলে সব উশুল করে নিচ্ছেন শম্পা।

গুস্তাভের গল্প

‘একটি আবেদন’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসুস্থ কুকুরটিকে বাঁচানোর আহ্বান রেখে লিখেছিলাম- ‘ঝরাপাতা আর আবর্জনার মাঝে জড়বস্তুর মতোই পড়ে ছিল প্রাণীটি। মধুর ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে চোখ অস্বাভাবিক কিছুর অস্তিত্ব পাওয়ায় আবার ফিরে চাইলাম। তখন স্পষ্টত অশ্রুতপূর্ব ধ্বনি শুনতে পেলাম তার তীব্র যন্ত্রণার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের নজরে কি পড়েনি কুকুরটি! এই বয়সটাই তো সবচেয়ে সংবেদনশীলতার, মায়ার।

আবেদন জানাই পশুচিকিৎসকদের কাছে, তারা দেখেই বুঝবেন কি রোগ। আমরা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী প্রথমে বাঁচানোরই চেষ্টা করব। আর তা না হলে- জীবনযন্ত্রণার অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নিলে কি খুব নিষ্ঠুরতা হবে? আমরা তো মানুষ। আমাদের আশপাশে যেসব প্রাণী দেখি, বৃক্ষ দেখি, তাদের শুশ্রুষার দায়ও কি আমাদের নয়?’

আমার লেখাটি নিয়ে আলাদা পোস্ট দেন রুমানা বৈশাখী। তিনি পরে প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘মারুফ ভাইয়ের কাছে ওর ছবি দেখে কাল ওকে নিয়ে পোস্ট দিছিলাম। দেয়ার সময় কেবল এটুকু জানতাম যে একটা অসহায় জান চরম কষ্ট পাচ্ছে। ওর নাম কি বা অন্য কিছুই জানতাম না। জানার দরকারও ছিল না। আমার শুধু ওরা কষ্ট পাচ্ছে দেখলেই পাগলের মতো লাগতে থাকে, নিজের বাচ্চাদের মুখ দেখতে পাই নিজে কিছু করতে পারব না, অন্য কেউ পারে কিনা সেই জন্য পোস্ট দিছিলাম; আমি এনিম্যাল ওয়েলফেয়ারের মানুষ না, ফ্ল্যাটবাসায় ভাড়া থাকি, চাইলেও কুকুর আনতে পারব না, নাহলে আমিই নিয়ে আসতাম।’

ব্যস্ত থাকায় এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বুঝে উঠিনি। পরে ফেসবুকের পোস্ট অনুসরণ করে বুঝলাম পশুপ্রেমী দুটি সংগঠনের ভেতর (Animal Rescuers Bangladesh-ARB Ges Animal Welfare Club of Dhaka University) কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। একটি সংস্থা আমার লেখা পড়ে কুকুরটির চিকিৎসার জন্য নিজ গৃহে নিয়ে আসেন। আরেক সংস্থা এটি ভালভাবে নিতে পারেনি, তারাই কুকুরটির চিকিৎসা করতে চান। ভাল কথা। কুকুরটির তাহলে ভাগ্য খুলে গেছে। সে অচিরেই সেরে উঠবে। এটিই তো স্বস্তির। আমার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। শুধু বিনীত অনুরোধ জানাই, পশুপ্রেম অবশ্যই ভাল, কিন্তু মানবপ্রেমও যে জরুরী।

১৬ জানুয়ারি ২০২২