করোনাকাল
বিচ্ছিন্ন অনুভব
মাহফুজা হিলালী

প্রবন্ধ
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
শামসুজ্জামান খান

গল্প
ডায়মন্ড লেডি ও পাথর মানব
হামিদ কায়সার

গদ্য
নিদ্রা হরণ করেছিল যে বই
মিনার মনসুর

নিবন্ধ
পঞ্চকবির আসর
সায়কা শর্মিন

বিশ্বসাহিত্য
আইজাক আসিমভের সায়েন্স ফিকশন
অনুবাদ: সোহরাব সুমন

বিশেষ রচনা
প্রথম মহাকাব্যনায়ক গিলগামেশ
কামাল রাহমান

শ্রদ্ধাঞ্জলি
মুজিব জন্মশতবর্ষ
মারুফ রায়হান
 
সাক্ষাৎকার
কথাশিল্পী শওকত আলী

জীবনকথা
রাকীব হাসান

ভ্রমণ
ইম্ফলের দিনরাত্রি
হামিদ কায়সার

ইশতিয়াক আলম
শার্লক হোমস মিউজিয়াম

নিউইর্কের দিনলিপি
আহমাদ মাযহার

শিল্পকলা
রঙের সংগীত, মোমোর মাতিস
ইফতেখারুল ইসলাম

বইমেলার কড়চা
কামরুল হাসান

নাজিম হিকমাতের কবিতা
ভাবানুবাদ: খন্দকার ওমর আনোয়ার

উপন্যাস
আলথুসার
মাসরুর আরেফিন

এবং
কবিতা: করেনাদিনের চরণ

১৬ বর্ষ ০৫ সংখ্যা
ডিসেম্বর ২০২৩

লেখক-সংবাদ :





মুজিব স্মরণে কবিতা
মারুফ রায়হান
শোকের মাস আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতার বিপুল উদ্ভাসন প্রত্যক্ষ করি আমরা। আবেগের এই প্রকাশ অত্যন্ত স্বাভাবিক ও সমীচীন। যদিও সাহিত্যের মানবিচারের প্রশ্নে এর অধিকাংশই যে পিছিয়ে পড়ে, সেকথাও আমাদের স্মরণে রাখা চাই। ।  
ইতিহাসের বেদনাবিধুর ও বিভীষিকাময় এক দিন পনেরই আগস্ট। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্টে সপরিবারে জাতির পিতার হত্যাকা-ের পর তাঁর প্রতি নিবেদিত রচনা ফল্গুধারায় প্রকাশিত হতে থাকে; এ যেন জাতির সকরুণ অশ্রুরই বাঁধভাঙা জোয়ার। স্বাধীনতার স্থপতি হিসেবে শেখ মুজিবকে বহু মাত্রায় মহিমান্বিত করার পাশাপাশি তাঁর নৃশংস হত্যাকা-ের জন্যে শোক প্রকাশ করা হয়। বস্তুত মুজিবহত্যার বিচারের বিষয়টি স্থগিত থাকার বাস্তবতায় শোক ও ক্রোধই প্রধান হয়ে উঠতে থাকে। বহু বিলম্বে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হলে, এবং পরবর্তীকালে বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার ভেতর দিয়ে সেই পুঞ্জিভূত শোক ও ক্রোধ কিছুটা সান্ত¡না লাভ করে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরপর্বে ছিলেন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির নয়নের মনি। তিনি নিজেও কি কবি নন? রাজনীতির কবি তিনি। তাঁর সাতই মার্চের ভাষণ কবিতারই মতো স্পষ্ট ও সংকেতময়, দ্রোহ ও দেশপ্র্রেমের রসে সিক্ত।
আমরা প্রত্যক্ষ করবো মুক্তিকামী নিপীড়িত মানুষের বাতিঘর হিসেবে বিরাজ করছেন ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু। তাঁর শারীরিক মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু তাঁর জীবিত আদল বাঙালির কাছে চিরবাতিঘরতুল্য। তারই প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে কবিতায় বঙ্গবন্ধুর চশমা ও ছিটকে পড়া পাইপটি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলা যায়Ñ নয়নসমুখে তিনি নাই, নয়নের মাঝখানে নিয়েছেন ঠাঁই। সামনে না থেকেও তিনি আছেন আজ সবচেয়ে বেশি।
বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে যত পঙক্তি রচিত হয়েছে তার নেপথ্যে যে পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আবেগ কাজ করেছে তা সত্যিই মূল্যবান। মানুষের হৃদয়ের ধ্বনির ওপরে তো আর কিছু হতে পারে না। আর ভালোবাসা আপনা আপনি সৃষ্টি হয় না।
সার্থক কবিতা রচনার জন্যে আবেগকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হয়, শিল্পরসের যোগান দিতে হয়। শিল্পের যুক্তি গ্রহণে অপারগ থাকে ভাবাবেগ। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে যে পঙক্তিমালঅ রচিত হয়েছে তাতে রয়েছে ছন্দের সুষমা, ভাষার বৈভব, সর্বোপরি এক সাগর ভালোবাসা।
দেশের সকল প্রধান কবিই কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলেছেন; বিশেষ করে পঞ্চাশ-ষাট-সত্তর Ñ এই তিন দশকে আবির্ভূত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কবিগণ অকৃপণভাবেই মুজিব বন্দনা করেছেন। এঁরাই পঁচাত্তরপূর্ব এবং পঁচাত্তর পরবর্তী পর্বে তাঁদের কবিতায় শেখ মুজিবের কথা মমতা ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন। এসকল কবির জীবনাভিজ্ঞতার ভেতরেই ছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক।
এসেছি বাঙালি রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ থেকে/ এসেছি বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর থেকে।/ আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে/ আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে।/ এসেছি আমার পেছনে হাজার চরণচিহ্ন ফেলে/ শুধাও আমাকে ‘এতদূর তুমি কোন প্রেরণায় এলে ?
কবি একাধারে সত্যদ্রষ্টা ও সত্য-উচ্চারণকারী। আমরা লক্ষ্য করে দেখব এই কবি শেখ মুজিবকে উপজীব্য করে যে কয়টি কবিতা রচনা করেছেন তার ভেতরে রয়েছে সত্যের শক্তি ও সৌন্দর্য।
ব্যক্তিগত গুণাবলি, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং অসামান্য চরিত্রমাধুর্যের সৌরভে অবিস্মরণীয় নেতাদের কাতারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তাঁর সমগ্র জীবন ছিল ইতিহাসের অতুলনীয় এক মহাকাব্যের মতো।