করোনাকাল
বিচ্ছিন্ন অনুভব
মাহফুজা হিলালী

প্রবন্ধ
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
শামসুজ্জামান খান

গল্প
ডায়মন্ড লেডি ও পাথর মানব
হামিদ কায়সার

গদ্য
নিদ্রা হরণ করেছিল যে বই
মিনার মনসুর

নিবন্ধ
পঞ্চকবির আসর
সায়কা শর্মিন

বিশ্বসাহিত্য
আইজাক আসিমভের সায়েন্স ফিকশন
অনুবাদ: সোহরাব সুমন

বিশেষ রচনা
প্রথম মহাকাব্যনায়ক গিলগামেশ
কামাল রাহমান

শ্রদ্ধাঞ্জলি
মুজিব জন্মশতবর্ষ
মারুফ রায়হান
 
সাক্ষাৎকার
কথাশিল্পী শওকত আলী

জীবনকথা
রাকীব হাসান

ভ্রমণ
ইম্ফলের দিনরাত্রি
হামিদ কায়সার

ইশতিয়াক আলম
শার্লক হোমস মিউজিয়াম

নিউইর্কের দিনলিপি
আহমাদ মাযহার

শিল্পকলা
রঙের সংগীত, মোমোর মাতিস
ইফতেখারুল ইসলাম

বইমেলার কড়চা
কামরুল হাসান

নাজিম হিকমাতের কবিতা
ভাবানুবাদ: খন্দকার ওমর আনোয়ার

উপন্যাস
আলথুসার
মাসরুর আরেফিন

এবং
কবিতা: করেনাদিনের চরণ

১৬ বর্ষ ০৫ সংখ্যা
ডিসেম্বর ২০২৩

লেখক-সংবাদ :





মাত্রা ও সুর
ওমর শামস
অক্ষরবৃত্তে ১৮ মাত্রা আর তার ভিতরের বিন্যাস তো জানা। আমরা আসলে তার সুর, শব্দ ব্যবহারের ভেদ হেতু, কি সুরের তারতম্য ঘটে, সেটা বুঝতে চাই। তারজন্য একটু ইতিহাস এবং রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে তিরিশের এবং তার পরের ক’জন কবির কবিতা উদ্ধৃত করবো। তার পরে সুরের আলোচনা।  এখনে কবিতার অন্য বিষয়, যেমন বিষয়, কল্পনা, চিত্রকল্প, বিস্তার, সঙ্গতি- এসব নিয়ে আলোচনার অবকাশ নেই। আমাদের আরাধ্য শুধুমাত্র এই ছন্দে, মাত্রায় সুর এবং শ্রুতি।






১. উদাহরণ
যতোদূর জানি, রবীন্দ্রনাথই প্রথম অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রা  লিখেছিলেন। আদি ইতিহাস খুঁড়িনি, অন্য কেউ কি হতে পারেন ? ‘কড়ি ও কোমল’-এ উদাহরণ :

কোথা কে বা কোথা সিন্ধু কোথা ঊর্মি, কোথা তার বেলা-
গভীর অসীম গর্ভে নির্বাপিত, নির্বাসিত সব।
জনপূর্ণ সুবিজনে, জ্যোতির্বিদ্ধ আঁধারে বিলীন
আকাশম-লে শুধু বসে আছে এক ‘চিরদিন’।
(চিরদিন, কড়ি ও কোমল)  

‘কাহিনী’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ ১৮ মাত্রায় ‘দীন দান’ লিখেছিলেন। ১৪ মাত্রায়  ‘মেঘদূত/মানসী’, ‘মানসসুন্দরী/সোনার তরী’, ‘সন্ধ্যা/চিত্রা’, ‘ ‘স্বপ্ন/কল্পনা’ লিখলেন কিন্তু ১৮ মাত্রা খুব একটা ব্যবহার করেন নি।

জীবনানন্দ দাশ : ধূসর পা-ুলিপির ২টি কবিতায় তিনি অক্ষরবৃত্তে ১৮ মাত্রা ব্যবহার করেছেন। একটি দীর্ঘ কবিতা, প্রেম, অন্যটি ৩৪টি কবিতার সমাহার, জীবন। ৩৪টি কবিতার প্রত্যেকটি ৯ পঙক্তির, প্রথম ৮ লাইন প্রত্যেকটি ১৮ মাত্রার- শুধু শেষ লাইনটি ২২ মাত্রার। সাতটি তারার তিমির-এ আরেকটি একই ছন্দের বিখ্যাত কবিতা, সমারূঢ। আসলে সাতটি তারার তিমির-এর শেষ কবিতা, মৃত্যুর আগে। এই কবিতার ২২ মাত্রা ব্যবহারে জীবনানন্দ তাঁর আত্মপ্রকাশের একটি প্রিয় সুর খুঁজে পেয়েছিলেন, যার বিশাল প্রয়োগ বনলতা সেন থেকে তাঁর পরের প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়। ২২ মাত্রায় আমরা পরে যাবো, এখন নয়। জীবন কবিতার ৩৪টির থেকে একটি :

যেখানে আসেনি চাষা কোনদিন কাস্তে হাতে লয়ে,
জীবনের বীজ কেউ বোনে নাই যেইখানে এসে,
নিরাশার মতো ফেঁপে চোখ বুজে পলাতক হয়ে
প্রেমের মৃত্যুর চোখে সেইখানে দেখিয়াছি শেষে।
তোমার চোখের ’পরে তাহার মুখেরে ভালোবেসে
এখন এসেছি আমি, - আর একবার কেঁপে উঠে
অনেক ইচ্ছার বেগে, - শান্তির মতন অবশেষে
সব ঢেউ ভেঙে নিয়ে ফেনার ফুলের মতো ফুটে,
      ঘুমাব বালির ’পরে, - জীবনের দিকে আর যাবনাকো ছুটে।

সুধীন্দ্রনাথ দত্ত : অক্ষরবৃত্তে ১৮ মাত্রার উদার এবং ঐশ্বর্যময় কৃতিত্ব দ্যাখালেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। সনেট রচনায় তাঁর ১৩ টি ১৮ মাত্রার অক্ষরবৃত্ত বাংলা কবিতার অতুলনীয় নিদর্শন । কৈশোরিক গ্রন্থ ‘তন্বী’তেও একটি অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রার সনেট আছে। এর বাইরে মালার্মের  ২টি এবং শেকসপীয়র-এর  ২৩টি সনেটের একই ছন্দে অপ্রতিদ্বন্দ্বী অনুবাদ।  এই বিশাল কর্মকা- থেকে উদ্ধৃতি :

অসম্ভব প্রিয়তমে অসম্ভব শাশ্বত স্মরণ;
অসংগত চিরপ্রেম ; সংবরণ অসাধ্য, অন্যায় ;
বন্ধদ্বার অন্ধকারে প্রেতের সন্তপ্ত সঞ্চরণ
সাঙ্গ করে ভাগীরথী অকস্মাৎ বসন্তবন্যায় ।

সে-মিলন অনবদ্য, এ-বিরহ অনির্বচনীয়
ধ্বংসসার স্বপ্নস্তূপে অচিরাৎ হারাবে স্বরূপ ;
আশা আজি প্রবঞ্চনা ; দিব না স্মারক অঙ্গুরীয় ;
ব্যবধি ব্যাপক জেনে অঙ্গীকার নির্বোধ বিদ্রূপ।
(মহাসত্য/ অর্কেস্ট্রা)
 
বিষ্ণু দে :  তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ, উর্বশী ও আর্টেমিস-এতেই, ২টি ১৮ মাত্রার অক্ষরবৃত্ত সনেট রয়েছে।  অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রায় আরও কবিতা রয়েছে, সনেটের মতোই ১০, ১২, ১৬ লাইনে এবং দীর্ঘতর কবিতাও। সারাজীবনই তিনি এই বুননে কবিতা লিখেছেন। প্রথম দিককার ১৮ মাত্রায় প্রায় সুধীন্দ্রীয় টোন তৎসম শব্দের জেরে। তবে স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ থেকে একটি ৮ পংক্তির কবিতা:

তোমার শরীরে পাই প্রকৃতির প্রতিটি উপমা  
তোমার মনের মধ্যে মানুষের দীর্ঘ ইতিহাস ;
তবুও, অযথা বুঝি সে জন্যই তুমি নিরুপমা ;
অনন্যা, শোনাই নিত্য একঘেয়ে পূরবী বিভাস।

হয়তো বা শোনো তুমি, কোনোদিন হয়তো শোনো না,
প্রতিদিন সূর্য রাঙে, প্রতি সন্ধ্যা সিঁদুরে রাঙায়,
হয়তো মাটিতে বাষ্পে শূন্যে ধুয়ে যায় তার সোনা,
তোমাতেই তবু রাত্রি ভোর করি ভুবনডাঙায় ।
(ভুবনডাঙায়/ স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ)

বুদ্ধদেব বসু :  বুদ্ধদেব বসু’র  যে-আঁধার আলোর অধিক গ্রন্থে ২৭টি অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রার ২৮টি সনেট আছে। প্রায় সনেট ফর্মে আরও ৩টি কবিতা আছে; একটি ১৫ পঙক্তির, বাকি দুটির কয়েকটি লাইন ১৮ মাত্রার চেয়ে দীর্ঘতর।  ১৬ লাইনের বা তার চেয়ে একটু বেশির কবিতা আরও কয়েকটি আছে। এর পরের কবিতাগ্রন্থগুলিতে অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রার কবিতা নেই। তাঁর জীবনের প্রথম পর্বের হিশেব এখানে নেই। একটি সনেট উদ্ধৃত করছি:

না, তুই নিবি না আর। শূন্য ছেনে হৃদয় ভরাবি।
হাঁ খোলে পাতালবেশ্যা, নেমে আসে কুমারী নীলিমা।
যেখানে ফোটে না ফুল, ম’রে যায় কীটের কালিমা।
যা বলে বলুক ঋতু, তুই শুধু পার হয়ে যাবি।

-“কিন্তু কোনখানে ?” হায়, সনাতন শীর্ণ কৌতূহল!
বোঝে না। অনবরত অবসানে আরম্ভ গতির,
স্নান, যান, ধানখেতে কিছু এসে যায় না নদীর,
সাগর করে না প্রশ্ন - ‘কোন বার্তা নিয়ে এলি, বল।‘

ভুলে যা ঝংকার, ঝর্না, বরদাত্রী কঙ্কাবতীকে
যার ঠোঁট ছুঁয়ে-ছুঁয়ে স্বরলিপি শিখেছিলি তুই ; -
ওরে সেই বরফ-গলানো রঙ্গ আর যদি থাকে না কিছুই,

তবু দ্যাখ, হৃদয়ের দুই তীরে ঐ নেমে আসে ঝাঁকে-ঝাঁকে
অতীত, আসন্ন কাল ; সেঁতু বাঁধে শ্রমিক সম্প্রতি -
যার কূট কুয়াশায় কেলি করে ঋষি আর ধীবরযুবতী।
              (আটচল্লিশের শীতের জন্য : ১ / যে আঁধার আলোর অধিক)

বিনয় মজুমদার : তাঁর ফিরে এসো চাকা’র প্রায় সব কবিতাই অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রার - এবং হয় সনেট, নয় প্রায় সনেট। উদাহরণ :

নানা কুন্তলের ঘ্রাণ ভেসে আসে চারিদিক থেকে।
হৃদয় উতলা হয়, ফুটন্ত জলের মতো মোহে ।
অনেকেই ছুঁয়ে গেছে, ঘুম ভেঙে গেছে বারবার।
ত্রুটিপূর্ণ মুকুরের মতো তারা আমাকে প্রায়শ
বিকৃত করেছে; হায় পিপীলিকাশ্রেণীতে একাকী
কীটের মতন আমি: অনেক হেঁটেছি অন্ধকারে।
তোমাকে তো ঈর্ষা করি ; হে পাবক, তুমি সব কিছু
গ্রাস ক’রে নিতে পারো - তোমার বাঞ্ছিত যুবকের
জীবন, মরণ, মন ; কখনোই প্রেমে ব্যর্থ নও ।
আর আমি বারবার অসফল , ক্ষমতাবিহীন 
প্রায়শ নিষ্ক্রিয় থাক, প্রত্যাশায় দ্যুতিময় মনে,
অপরের অভ্যন্তরে ক্ষুধার মতন সংগোপন
দুর্বোধ্য সমস্যাগুলি নিবেদিত হবে - এই ভেবে।
কিছুই বলে না কেউ, হে পাবক, তুমি বিশ্বজয়ী।
(২১ মে, ১৯৬২ / ফিরে এসো চাকা)

শক্তি চট্টোপাধ্যায়। অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তও লিখেছেন। তাঁদের কবিতা এখানে উদ্ধৃত নয়।

আল মাহমুদ :  একই ছন্দ, একই মাত্রা তবুও আল মাহমুদ-এর সোনালি কাবিন-এ একটু অন্য সুর পাওয়া গ্যালো।

বৃষ্টির দোহাই বিবি, তিলবর্ণ ধানের দোহাই
দোহাই মাছ-মাংস দুগ্ধবতী হালাল পশুর,
লাঙল জোয়াল কাস্তে বায়ুভরা পালের দোহাই
হৃদয়ের ধর্ম নিয়ে কোন কবি করে না কসুর।
কথার খেলাপ করে আমি যদি জবান নাপাক
কোনদিন করি তবে হয়ো তুমি বিদ্যুতের ফলা,
এ-বক্ষ বিদীর্ণ করে নামে যেন তোমার তালাক
নাদানের রোজগারে না উঠিও আমিষের নলা ।
 
সৈয়দ শামসুল হক :  ভাষাকে আরও অন্ত্যজ করলেন পরাণের গহীন ভিতর-এর কবি।

মানুষ এমন ভাবে বদলায়া যায়, ক্যান যায়?
পুন্নিমার চান হয় অমাবস্যা কিভাবে আবার?
সাধের পিনিস ক্যান রঙচটা রোদ্দুরে শুকায়?
সিন্দুরমতির মেলা হয় ক্যান বিরান পাথার?
মানুষ এমন তয়, একবার পাইবার পর
নিতান্ত মাটির মনে হয় তার সোনার মোহর।।
 
২. ব্যাখ্যান
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত’র উক্তি, “মালার্মে-প্রবর্তিত কাব্যাদর্শই আমার অন্বিষ্ট: আমিও মানি যে কবিতার মুখ্য উপাদান শব্দ; এবং উপস্থিত রচনাসমূহ  শব্দপ্রয়োগের পরীক্ষা-রূপেই বিবেচ্য”, সংবর্ত-র ভূমিকা।  তাঁর শব্দচয়ন তৎসম এবং যুগ্মশব্দ-বহুল। এই শর্ত মেনেই, ১৮ মাত্রার অক্ষরবৃত্তে তাঁর শব্দচয়ন এমন যে যুগ্মশব্দের ধাক্কায় এটি ধ্বনিগতভাবে ঠিক ‘আয়ামবিক পেন্টামিটার’ হয়ে ওঠে। যেমন, ‘অসম্ভব প্রিয়তমে অসম্ভব শাশ্বত স্মরণ’, গানের জগতে এটি ঝাঁপতাল।  এই সাউন্ড শব্দচয়নের এবং তাঁর কথিত “ধ্বনি ও যতির এই সুব্যবস্থিত নক্সা”-র জন্য। সুধীন্দ্রনাথ-এর প্রাথমিক শিক্ষা হয়েছিল ইংরেজিতে। তাই, আমার মনে হয়, বাংলা কবিতার ছন্দকে তিনি ইংরেজি ব্যাকরণে বিশ্লেষণ করে নিয়েছিলেন মনে মনে।
বুদ্ধদেব বসু’র কবিতাটি তাঁর দ্বিতীয় পর্বের যার শুরু, যে আঁধার আলোর অধিক, থেকে। “কবিতার শত্রু ও মিত্র”  রচনায় তিনি লিখেছেন, “... এর জন্য চাই এমন ভাষা যা নির্ভার অথচ অগভীর নয়, যা গম্ভীর সংস্কৃতের  পাশে ছিপছিপে কথা বুলিতে মানিয়ে নিতে পারে, ভালোমানুষের মতো চেহারা নিয়েও অভিনয়নিপুণ। “সুধীন্দ্রনাথ দত্ত’র যুক্তাক্ষরের ঝোঁক এখানে প্রধান নয়, বরং কথ্য ও তৎসমের মিশ্রণে এক স্বতশ্চল  ভঙ্গী।
বিষ্ণু দে ভারী উচ্চারণের চলন থেকে সহজ কথার ঢঙের কবিতায় বিবর্তিত হয়ে এসেছেন কালক্রমে।
জীবনানন্দ দাশ উপরোক্ত তিনজনের চেয়েই আলাদা। তাঁর শব্দচয়ন যুক্তাক্ষরবিরল এবং কবিতার লয় বিলম্বিত। তদুপরি, তাঁর লোকজ শব্দ ভিন্ন, যার ব্যবহার তাঁর আগে প্রায় নেই। তবে জীবনানন্দ তাঁর নিজের ভাবনার সঙ্গে সংগতিশীল হয়ে আরও বিলম্বিত ২২ মাত্রায় চলে গিয়েছিলেন পরের কবিতায়।
বিনয় মজুমদার এবং শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের  সুর জীবনানন্দকে প্রায় অনুসরণ করে।
আল মাহমুদ-এর অক্ষরবৃত্ত ১৮ মাত্রার সুর লোকজ আরবি শব্দ, গ্রামীণ শব্দ ব্যবহার হেতু স্বভাবতই পৃথক।
সৈয়দ শামসুল হক একই ধারায় আরও প্রাদেশিক।
একটা জিনিশ চোখে পড়ে এবং উল্লেখযোগ্য যে এই ছন্দে, মাত্রায় বিশেষ করে সনেটে প্রায় সব কবির কবিতার বিষয়ই প্রেমের, শুধু জীবনানন্দ দাশ এবং বুদ্ধদেব বসু’র ছাড়া।