অতো কোলাহল অতো ভীড়
শহরের পরতে পরতে অন্তহীন অসঙ্গতি
সংশয় দ্বিধা ও শঙ্কার প্রজাপতি
অতোসব সকল কিছুর ছিলে তুমিই আমীর
আজ অকস্মাৎ থমকে গেছে সব
অজ্ঞাতনামা অদৃশ্য এক হন্তারক নীরবে
জীবনের প্রদীপ ছলকে সর্বত্র
আগুনের মতো উস্কে দিচ্ছে অনিচ্ছার প্রণতি
শাহবাগ ফার্মগেট গুলিস্তানের পথ আগলে
থকথকে মানুষের ভীড়ে
মাদুলি বাকল তাবিজ তোমার
ব্ল্যাকারের পকেট ভর্তি ফাঁপড়
চীনেবাদাম ঘুগনি মুড়ি সিনেপ্লেক্সের
কাউন্টার উপচানো মিশন ইমপসিবল
ভিউ টু কিল ফর ইওর আইজ অনলি
গোপন প্রেমগুলি নিভৃতে হচ্ছে বলি
সহসা থমকে গেছে পশ্চিম গ্যালারির কাউন্টার
সাফ সাফাই ট্রাফিক জ্যামে
প্রশিক্ষিত টোকাইয়ের পিক পকেট এনকাউন্টার
প্রেসক্লাবের গেট আটকে
প্রতীকী অনশনে শিক্ষক সেবিকা সেরেস্তাদার
এন্তার জনগণ একাকার আজ-
নূর হোসেন চত্ত্বরে মিছিলে ভাড়াটে পিকেটার
নেতাদের পকেট উগড়ানো গণতন্ত্রের জিম্মাদার
হাওড়া ব্রিজ কিংবা স্টেশন সকলই আজ
ময়দান সম বিস্তীর্ণ অথচ থমথমে
স্ট্যাচু অব লিবার্টির আদলে
ঋজু ও টানটান ন্যূয়র্কে কেউই দাঁড়ায় না ভ্রমে
টাইম স্কোয়ারের ভীড়- অকস্মাৎ অন্তরীণ
স্লাইডিং স্লোপে অবতরণমুখী ডাউনিং স্ট্রিট
ল্যুভরের তালা ঝোলানো দরোজায়
শিল্পতৃষ্ণায় গলা শুকানো পর্যটক
মিয়ামি কিংবা হাওয়াইয়ের উদ্দাম বিচ
অল আর টোটালি আউট অব রিচ
আইফেল টাওয়ারের পত্তনি ঘিরে
চুম্বন তেষ্টায় হা-পিত্যেশ করা যুগলের ঠোঁটে
কারফিউ নেমে আসা নিশ্চল সম্বিত
নিঃসঙ্গতার অবসাদে হঠাৎ বর্ষীয়ান
কুহকের চোখ ভেঙে উপচে আসা নিদ
গণ্ডোলা-শূন্য ভেনিসের জলমগ্ন শরীরে
রঙধনু মাছ আর হাঁসেদের উপাদেয় সমীর
পৃথিবী সর্বত্র আজ বড় বেশি সুস্থির
ডলফিনের স্বাধীনতা চাক্ষুস করতে
কক্সবাজার সৈকত ছেয়ে ভীড় করা
লাল কাঁকড়ার হর্ষনিনাদি মিছিল
ইতালির বন্দর- জমিনের বুকে আল তোলা
বার্লিন দেয়ালের স্মৃতিচিহ্ন ক্ষত বৃশ্চিক
মানুষের কাম ক্রোধ ঘৃণা ও ভালোবাসার
গানগুলো লিখে রাখা আমাদের
মরিয়া প্রেম বহুলাংশে প্রান্তিক
মৃত্যুর মিছিলে ভীড় করা পৃথিবীর
প্রাণচঞ্চল শহরের দিকভ্রান্ত নাগরিক
তোমাদের স্বস্তি ও উদযাপনের জিম্মা নিয়ে
পলাতক বুঝি আজ জীবনের সকল সঞ্চয়
প্রকৃতির কাছে বিলিয়ে দিয়ে সব
আগলে রেখেছো বুঝি- শুধুই সংশয়
নিঃসঙ্গ প্রয়াণের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ঘিরে
বুকের ভিতর তেহাই বাজিয়ে ছলকে ওঠা
সাত রাজ্যের সতেরো সহস্র পদ ভয়
কোনোদিন তুমি ফের করবে কি জয়!
বলো তো মানুষ দেখি
করোনা তোমার কী হয়!